শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন

পুলিশ মানুষের প্রথম ভরসাস্থল হতে চায় : আইজিপি

পুলিশ মানুষের প্রথম ভরসাস্থল হতে চায় : আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘‘পুলিশ বাহিনী দেশের জনগণের প্রথম ও শেষ ভরসার স্থল হতে চায়। তাই পুলিশের ‘ম্যান্ডেট’ এর বাইরে গিয়ে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। দিন-রাত পুলিশকে জনগণের সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।’’

শুক্রবার (১ জুলাই) বিকালে পুলিশ লাইন মাঠে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি।

বেরজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা জনগণের প্রথম এবং শেষ ভরসার স্থল হতে চাইলে দেশের সকল স্তরের পুলিশ বাহিনীকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের টার্গেট এদেশের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে পুলিশকে পাশে থাকতে হবে।’

ইতোমধ্যেই পুলিশ জনগণের সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণের উদাহরণ টেনে পুলিশের সর্বোচ্চ এই কর্তা ব্যক্তি বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে সাহায্য চেয়ে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বৃদ্ধা যখন ফোন করে বলেন আমার স্বামী কিছুক্ষণ আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। এটি কিন্তু পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু আমার পুলিশ বাহিনী গভীর রাতে অ্যাম্বেুলেন্স জোগাড় করে বৃদ্ধার স্বামীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। করোনা মহামারীর সময় গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে দিন-রাত করোনায় আক্রান্ত মানুষের পাশে ছিল এই মানবিক পুলিশ।’

পুলিশ বাহিনীকে জনগণের আরও দৌরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে ড. বেনজীর আরও বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা ভালো কাজ করছে। কিন্তু ভালোর কোনো শেষ নেই। আরও ভালো ভালো কাজের মধ্য দিয়ে পূর্বের ভালো কাজের রেকর্ড পুলিশ বাহিনীকে প্রতিনিয়ত ভাঙতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সেই সময়ের জন্য পুলিশ বাহিনীকে প্রস্তুত করতে হবে। এজন্য বাহিনীর সকল স্তরের সদস্যকে সেইভাবে কাজ করতে হবে।’

ড. বেনজীর বলেন, ‘দেশটাকে আরও সামনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞায় দেশ অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পদ্মা সেতু তৈরী করেছি। এরকম আরও ২টি পদ্মা সেতু তৈরীর সক্ষমতা দেশের রয়েছে। আজকের বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তানের সময়কার বাংলাদেশ না। আমরা বর্তমানে ৩৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমরা পৃথিবীর ২৪ তম বড় অর্থনীতির দেশে পরিণত হবো।’

আইজিপি বলেন, ‘যতই আমরা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি ততই একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি, একা হয়ে যাচ্ছি। সামাজিক বিচ্ছিন্নতার কারণে বর্তমানে নৈতিক অবক্ষয় বেশি হচ্ছে। ফলে ছাত্র শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করছে। আবার এক শিক্ষক আরেক শিক্ষককে শায়েস্তা করতে ছাত্রকে লেলিয়ে দিচ্ছে। নৈতিক এই অবক্ষয় থেকে দেশ, সমাজ তথা দেশের নাগরিকদের রক্ষা করতে হবে। এজন্য শুধু পুলিশ বাহিনী নয়; সবাইকে হাতে হাত রেখে নৈতিক এই অবক্ষয় রোধ করতে হবে।’

ধর্মীয় উগ্রবাদ মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘ধর্মীয় উগ্রবাদ আমাদের দেশের কোনো বিষয় নয়। বার বার এটি বাইরে থেকে এসেছে। আমরা জনগণ সবাই মিলে এটিকে পরাজিত করেছি। কিন্তু এখন আমাদের সবাইকে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করা দরকার যে, আগে আমরা দেখেছি একটি নির্দিষ্ট ধর্মের উগ্রবাদ। কিন্তু এখন আমরা বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রবাদের বিষয়টি লক্ষ্য করছি। ফলে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে এবং সামাজিক প্রতিবেশ-পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। কাজেই যেকোনোভাবে ধর্মীয় উগ্রবাদকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।’

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল (এ্যাডিশনাল আইজি) আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দীক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল প্রমূখ।

এর আগে আরএমপির প্রতিষ্ঠবাষির্কী উপলক্ষে শুক্রবার বেলা ১১ টায় বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। র‌্যালি শুরুর আগে আইজিপি বেলুন ফেস্টুন ও কবুতর অবমুক্তকরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। র‌্যালি শেষে প্রধান অতিথি পুলিশ লাইন্সে বিশেষ রক্তদান কর্মসূচি, অনাবাদী জমিতে সবজি চাষের উদ্বোধন, বৃক্ষরোপণ এবং মৎস্যপোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com