বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

গোদাগাড়ীতে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে ইউপি মেম্বার ও তার পিএস ফাঁসলেন মাদক মামলায়

গোদাগাড়ীতে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে ইউপি মেম্বার ও তার পিএস ফাঁসলেন মাদক মামলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য সেতাবুর রহমান বাবু ও তার পিএস আলমগীর হোসেন অন্যর বাড়ীতে হেরোইন ফেলে দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফাঁসলেন। বিষয়টি গোদাগাড়ীর টক অফ দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারী) সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আতিকের নেতৃত্বে মাটিকাটা ইউনিয়নের উজানপাড়া গ্রামের আব্দুল্লার স্ত্রীর ফেনসি বেগমের বাড়ীতে মাদক উদ্ধারের অভিযানে যায়। সেতাবুর রহমান বাবু ডিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে আসছে। ডিবি পুলিশ উজানপাড়া এলাকার ফেনসির বাসায় সেতাবুর রহমান বাবু ও তার পিএস আলমগীরকে নিয়ে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে। এক সময় কৌশলে সেতাবুর রহমান বাবু ও আলমগীর ওই বাড়ীতে হেরোইন ফেলতে গেলে এলাকাবাসী দেখে ফেলে।

এই সময় অভিযানে নেতৃত্বে থাকা ডিবি পুলিশের ওসি আতিক হাসানও অবগত হয়। সেতাবুর রহমান বাবু ও তার পিএস আলমগীরের এমন কান্ডে ক্ষুদ্ধ হয়ে ঘিরে ফেলে ও তাকে আটক করার দাবি জানায়।

গোয়েন্দা পুলিশ জনরেষে পড়ে সেতাবুর রহমান বাবু মেম্বার ও তার পিএসকে আটক করে রাখে। সেতাবুর রহমান বাবু মাটিকাটা গ্রামের আলহাজ্ব আতাবুর রহমানের ছেলে আর আলমগীর উজানপাড়া গ্রামের মুক্তার হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, সেতাবুর রহমান বাবু মেম্বার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক সম্রাট। তার পুরো পরিবার মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। সে এলাকায় বিভিন্ন জনের বাসায় এভাবেই হেরোইন ইয়াবা ফেলে ফাঁসিয়ে আসছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করছে। ডিবি পুলিশের সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় এলাকার লোকজন তার ভয়ে আতঙ্কে আছে। তার বিরোধী লোকজনকে এভাবেই ফাঁসিয়ে আসছে।

এই ঘটনায় অভিযানে যাওয়া ফেনসির বাসা থেকে তাকেও গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। সে অন্য একটি মাদক মামলার পলাতক আসামী। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন ফেনসির বাড়ীতে এর আগে কোন মাদক না পেলেও বাবু মেম্বারই পুলিশের সাথে সখ্যতা থাকায় পলাতক আসামি করে। তার নাম মাদক মামলা থেকে কেটে দেওয়া হবে বলে ৩-৪ লাখ টাকা দাবি করে আসছিলো। তার এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজকে সে নিজে ডিবি পুলিশের সাথে বাসায় ঢুকে হেরোইন ফেলে দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছিলো।

এই ঘটনায় সেতাবুর রহমান বাবু মেম্বার ও তার পিএস আলমগীরের কাছে থেকো ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে মামলার স্বাক্ষী এবাদুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, ডিবি পুলিশ আমাকে ডেকে জব্দ তালিকায় আমার স্বাক্ষর নিয়েছেন।

এই ঘটনার পর থেকেই ডিবি পুলিশ সাংবাদিকদের তথ্য দিতে গড়িমসি ভাব শুরু করে। অভিযানে থাকা ডিবি ওসি আতিক হাসান সন্ধ্যা থেকে রাত সোয়া ৯ টা পর্যন্ত কোন ফোন রিসিভ করেন নি। পরে ফোন রিসিভ হলে তিনি বলেন, এই ঘটনায় সেতাবুর রহমান বাবু মেম্বারের কাছে থাকা ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। বাবু মেম্বার ও তার সহযোগী আলমগীর ও বাড়ীর মালিক আব্দুল্লাহকে হেরোইন মামলা দেওয়া হয়েছে।

আব্দুল্লাহর স্ত্রী ফেনসিকে আরেক মাদক মামলার পলাতক আসামি থাকায় তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাবু মেম্বার ডিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে এমন ভাবে ফাঁসাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি আতিক হাসান বলেন, সে বাবু মেম্বার সোর্স কথাটি সঠিক নয়।আর সোর্স হলে আমরা কেনোই বা আটক করবো। সরকার চাইছে মাদক নির্মুল হবে আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি বলে জানান।

জেলা ডিবি ওসি আব্দুল হাইয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই ঘটনায় সেতাবুর রহমান বাবু মেম্বার ও তার সহযোগীকে ১০০ গ্রাম হেরোইনের মামলা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওই বাড়ীর এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com