মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

ওয়াসা এমডির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

ওয়াসা এমডির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে টাকা পাচারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি কেনার যে অভিযোগ উঠেছে তা অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দুদক উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করবে। টিমের আরেক সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক মাহবুব আলম।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ১৪ বাড়ি সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

এর আগে সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকসিম এ খানের দুর্নীতি বিষয়ে দুদককে জোর অনুসন্ধান করতে বলেন। যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪ বাড়ির দুর্নীতির বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তা ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিন তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর আদালতের নজরে আনেন দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। দুদক আইনজীবী বলেন, বিষয়টি খুব উদ্বেগজনক। অনেক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভাড়া বাসায় থাকেন; অথচ ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার অভিযোগ।

ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে কিনেছেন এসব বাড়ি। সব বাড়ির দাম টাকার অঙ্কে হাজার কোটি ছাড়াবে। দেশ থেকে অর্থ পাচার করে তিনি এসব বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়ি কেনার অর্থের উৎস ও লেনদেন প্রক্রিয়ার তথ্য তালাশে নেমেছে ইন্টারপোলসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি কেনা এবং অর্থ পাচারকারী হিসেবে তাকসিম এ খানের নাম থাকা নিয়ে সম্প্রতি দুটি অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে। এতে কিছু বাড়ির সুনির্দিষ্ট ঠিকানা, ছবি, কোন্ বাড়ি কখন, কত টাকায় কেনা – তা উল্লেখ করা হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) ‘গভর্নমেন্ট ওয়াচ নোটিশ’-এর একটি কপি অভিযোগের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়।

তবে এ বিষয়ে তাকসিম এ খান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি আছে, এ তথ্যটি ডাহা মিথ্যা কথা। এর কোনো সত্যতা নেই। এ ১৪ বাড়ির মধ্যে শুধু একটি আমার স্ত্রীর কেনা। বাকি কোনোটিই আমাদের নয়। তাও সেটা বাড়ি নয়, অ্যাপার্টমেন্ট। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তাকসিম এ খান বলেন, ‘যে ১৪টি বাড়ির কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে ৫টি বাড়িতে আমার পরিবার সেখানে বিভিন্ন সময় ভাড়া থেকেছেন। আর একটি বাড়ি আমার স্ত্রীর নামে। আমি, আমার স্ত্রী, সন্তান সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আমার স্ত্রী-সন্তান সেখানে ওয়েল স্টাবলিস্ট, তাই সেখানে একটি বাড়ি কেনা খুব অসুবিধার কিছু নেই। আমার স্ত্রীর নামেই ওই একটা বাড়ি আছে। সেটাকেও বাড়ি বলা যাবে না, এটা একটা অ্যাপার্টমেন্ট।’ যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ বলতে শুধুমাত্র স্ত্রীর নামে থাকা একটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে, এছাড়া দেশে বা বিদেশে আর কোনো সম্পদ নেই।

ওয়াসার এমডি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আমাকে নিয়ে এমন নানা রিপোর্ট এসেছে; কিন্তু এগুলো সব মিথ্যা তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই এগুলো পুরোটাই অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যারা ওয়াসা থেকে অনৈতিক সুবিধা পায়নি বা পাচ্ছে না, তারাই মূলত এসব করে যাচ্ছে।’

সাংবাদিকদের সামনে তিনি পাল্টা অভিযোগ করে আরও বলেন, যারা আমকে ওয়াসার এমডি পদে দেখতে চান না, কিংবা তার কাজে যারা ক্ষুব্ধ, তারাই সুনামহানির ষড়যন্ত্র করছে। এমন কী হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

বিদেশি ঋণে করা ওয়াসার মেগা প্রকল্প থেকে হাজার কোটি টাকা লোপাট এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগও অস্বীকার করেন তাকসিম এ খান।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com