শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন

আধুনিক প্রযুক্তিতে ধান চাষ

আধুনিক প্রযুক্তিতে ধান চাষ

জাকির হোসেন সনি,
গোমস্তাপুর প্রতিনিধিঃ
সমলয় পদ্ধতি ধান চাষের জন্য নতুন একটি সময়োপযোগী পদ্ধতি।এই পদ্ধতির মাধ্যমে বীজতলা থেকে ফসল ঘরে তুলা পর্যন্ত কৃষকগণ যন্ত্র ব্যবহার করবে। এদেশে সমলয় পদ্ধতি আগে থেকেই চালু রয়েছে
তবে গ্ৰামাঞ্চলে এই পদ্ধতির ব্যবহার চোখে পড়েনি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ধান চাষে খরচও কম হয়। ফলে কৃষকগণ ধান চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোমস্তাপুর কৃষকদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে। সমলয় পদ্ধতির মাধ্যমে ধান চাষ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সম্প্রতি গোমস্তাপুর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও রাইস ট্রান্সপ্লাটার যন্ত্র দ্বারা ধানের রোপন কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে এক সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার তানভির আহমেদ সরকার। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোমস্তাপুর সার্কেল) শামছুল আজম, উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার কাওসার আলী, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ফিরোজ আলী, রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সোহরাব ও কৃষক সাইদুর রহমান প্রমূখ।

কথা হয় রহনপুর ইউনিয়নের ষাড়বুরুজ এলাকার কৃষক তোফাজ্জুলের সাথে।তিনি বলেন, আমাদের গ্ৰামেই রয়েছেন কৃষি অফিসের এক কর্মকর্তা।সমলয় পদ্ধতিতে কি পরিমাণ লাভবান হওয়া যায়? এ প্রসঙ্গে তিনি আমাকে বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বলেন, তার কথা শুনে আমি আশ্বস্ত হয়েছি।বেশ কয়েকদিন আগে থেকে ট্রেতে করে বীজতলা লাগানোর পরে ধান রোপন শুরু করেছি। আশাকরি এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করে লাভবান হবো।

কৃষক সামিরুল ইসলাম বলেন, আগে এক বিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে চাষাবাদ বাবদ ১৩ -১৪ হাজার টাকা খরচ হতো।সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করে খরচের মাত্রা ৬-৭ হাজার টাকা কমে যাবে। কৃষি অফিস যদি প্রতিবছর আমাদের মতো কৃষকদের প্রতি এগিয়ে আসেন তবে ধান চাষ করে আমরা লাভবান হবো বলে বিশ্বাস করি। এবার আমি এই পদ্ধতিতে ৫ বিঘা বোরো ধান রোপন করবো।

কৃষক ইকবাল হোসেনের মতে,এই পদ্ধতিতে ধান চাষে আমরা আগ্রহী ছিলাম না।ধান চাষ করে লাভের মুখ দেখবো। না লোকসানে পড়বো এই নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। কিন্তু এখন এই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি হয়ে যাওয়া দেখে ধান চাষে আগ্রহী হয়েছি। আমাকে দেখে অনেক কৃষক এই পদ্ধতিতে ধান চাষে এগিয়ে আসছে।

এবিষয়ে জানতে গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভির আহমেদ সরকারের কাছে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, আধুনিক কৃষির সময়োপযোগী প্রযুক্তি হচ্ছে সমলয় পদ্ধতি। নতুন এই পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে ফসল কাটা সবই একযোগে করা হবে।এতে উৎপাদন খরচ অনেক কম হবে। পরীক্ষামূলক ভাবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে রহনপুর ইউনিয়নের ষাড়বুরুজ এলাকায় প্রায় ৫০ একর জমিতে ধান রোপন শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অপচয় রোধে প্রচলিত চাষাবাদের রীতি বাদ দিয়ে প্লাস্টিকের ট্রেতে লাগানো হয়েছে ধানের বীজ। এই বীজ থেকে চারা উৎপাদন হবে ২০-২৫ দিনের মধ্যে। অতঃপর রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হবে। এক একর জমিতে চারা রোপণ করতে সময় লাগবে এক ঘণ্টা।একই সময়ে চারা রোপণ করার কারণে ধান পেকে যাবে একই সময়ে। তখন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে একই সময়ে ধান কাটা ও মাড়াই করা যাবে। বেশী জমিতে চাষাবাদ করার ক্ষেত্রে এই যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে খরচ হবে সাশ্রয়ী। হাইব্রিড জাতের এসএল-৮ -এইচ ধান বিঘা প্রতি ৪০ মণের মতো হবে।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com