শুক্রবার, ০২ Jun ২০২৩, ১১:৩৮ অপরাহ্ন

দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গোদাগাড়ীর ইউএনও’র বিচার দাবি

দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গোদাগাড়ীর ইউএনও’র বিচার দাবি

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ আদিবাসীদের বরাদ্ধকৃত প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানে আলমের অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার ( ১৯ জানুয়ারী) সকাল ১১ টার দিকে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গোদাগাড়ী উপজেলা শাখা ও জনগণের আয়োজনে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট এই কর্মসূচী পালন করা হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের গোদাগাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম।

বক্তব্য রাখেন, আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্রিষ্টিনা বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক গনেশ মার্ডি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, দপ্তর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমরম ।

আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সদস্য রাজকুমার শাও, রাজশাহী মহানগর সাধারণ সম্পাদক আন্দ্রিয়াস বিশ্বাস, রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক সুসেন কুমার শ্যামদুয়ার, গোদাগাড়ী উপজেলা সাবেক সভাপতি নন্দলাল টুকু, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নকুল পাহান, সাধারণ সম্পাদক তরুন মুন্ডা, আদিবাসী যুব পরিষদের সদস্য উত্তম কুমার মাহাতো প্রমুখ।

সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজশাহী জেলা সভাপতি কল্পনা রায়, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলী বরজাহান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার আদিবাসীদের ঘর নির্মান, ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি, শিক্ষা উপকরণ, ছাত্রছাত্রীদের বাইসাইকেল বিতরণ, বিভিন্ন প্রশিক্ষন, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আয়বৃদ্ধিমুলক কর্মসূচি, একটি বাড়ি একটি খামার, পরিবার ভিত্তিক গবাদি পশু প্রদান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের জন্য এককালিন অর্থ নিয়ে নয়ছয় করা হচ্ছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্রটিও গত ৩ বছর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর প্রশিক্ষক বাদ দেওয়ার পর। প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলাম নামে একজন প্রশিক্ষক থাকলেও প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি কার্যত আর চলে না, বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কারন এই খাত থেকে তার বেতন দেওয়া হলেও ইউনও তাকে দিয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখছে। আদিবাসী শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার জানে আলমের নেতৃত্বে দুর্নীতিবাজ অফিসারদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে এসব প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বিঘ্ন ঘটছে এবং আদিবাসীরা তাদের নায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আদিবাসী প্রকল্পগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেয় না এবং অন্যান্য প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের সাথেও জড়িত থাকেন।

ইউনও সরকারি কর্মসূচি ও জাতীয় কর্মসূচিতেও আদিবাসীদের অংশগ্রহণ করায় না। আদিবাসী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তিও তারা ঠিকমত দেয় না। টাকা পড়ে থাকলেও বন্টন করে না।

২০২১- ২০২২ অর্থবছরে ঘর পাওয়া প্রায় প্রতিটি আদিবাসী পরিবারকে ঘর নির্মান মিস্ত্রিদের খাওয়ানো বাবদ পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা খরচ করানো হয়েছে। সেসব টাকা আদিবাসীরা ফেরতের দাবি করছে।

অনেক আদিবাসীদের ঘর পাওয়ার পরও ঘর নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। কারন অন্যের জমিতে ঘর নির্মান করে চলে গেছে। আদিবাসী মাঝে পরিবার ভিত্তিক ২টি করে অসুস্থ ভেড়ার বাচ্চা প্রদান করা হয়। সেই কারনে অধিকাংশই ভেড়া মারা গেছে।

গোদাগাড়ী উপজেলায় বিতরণকৃত ২৬৬ টি বকনা গুরুর মধ্যে বহু অ-আদিবাসীদেরকেও দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীদের দখলীয় খাস জমিতে নির্বাহী অফিসার জোর করে ঘর নির্মান করে অ-আদিবাসীকে ঘর দিচ্ছে। আদিবাসী গ্রামের কবরস্থানগুলো ভূমিদস্যুরা জোর জবরদস্তি করে দখল করছে। এসব বিষয়ে নিবাহী অফিসে গেলে কোন ধরনের প্রতিকার পাওয়া যায় না। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করলেও গুরুত্ব দেওয়া হয় নি।

পরে তারা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বরাবার আদিবাসীদের বরাদ্দকৃত প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি ও বিচারের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com