রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৭ অপরাহ্ন
ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালের দালাল কর্তৃক নানা অনিয়ম ও প্রতারনার কারণে নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাকে পুঁজি করে হাসপাতাল কর্মচারীদের সহযোগিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালালচক্র। হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগী ও ভর্তি রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অসাধু কর্মচারী ও দালালদের মধ্যে চলে টানাটানির প্রতিযোগিতা।
হাসপাতালের অসাধু গুটি কয়েক কর্মচারীদের বিভিন্ন অনিয়মে সরোবর ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালটি। দীর্ঘ ১ সপ্তাহের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৫ টাকার টিকিট কিনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন রোগীরা। কিছু রোগীকে লাইন ভেঙ্গে আগে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০ টাকার মাধমে প্রস্তাব করছেন হাসপাতালের অবস্থান করা দালাল চক্র। এতে করে লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য রোগীদের। ডাক্তার কক্ষে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছে তার সাথে সাথে সেই রোগীকে নিয়ে টানাটানি করছে অসাধু প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিকের দালালরা।
হাসপাতালের পুরাতন বিল্ডিং-এর মূল গেইটে ডিউটিরত দারোয়ান শাহাদাত মাসিক মাসোহারা সংগ্রহ করে দালালদের গেইটের ভিতরে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। দারোয়ান শাহাদাত এর নামে আরো অভিযোগ রয়েছে।
রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে হাসপাতালের দারোয়ান শাহাদাত ও অন্যান্য কর্মীরা অশোভনীয় আচরণ করেন।
ছাগলনাইয়া থেকে আসা আফজাল হোসেন (৪৫) বলেন, কম টাকায় ভাল চিকিৎসা নিতে সরকারী হাসপাতালে আসি। কিন্তু লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে অনেক কষ্ট করতে হয়। ডাক্তার দেখানোর পর আমাদের নিয়ে টানাটানি করে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। আমরা গরিব মানুষ আমাদের সাধ্য হয়না অধিক মূল্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে, কিন্তু বাধ্য হয়ে তাদের সাথে যাইতে হয়।
সোনাগাজী থেকে আসা কামরুন্নেসা (৩০) অভিযোগ করেন, ডাক্তারদের সাথে দালালচক্রের যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক অবৈধ কাজ চলছে। দালালরা নিয়মিত ডাক্তার কক্ষে ও বাহিরে থেকে রোগীদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠায়। ইসারার মাধ্যমে একে আরেকজনকে চিনিয়ে দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে পাঠায়। আবার ৫০ টাকার মাধমে রোগীকে লাইন ভেঙ্গে আগে নিয়ে যায় দালালরা।
ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি সদর হাসপাতালের দালালদের আভিজাত্য ও নানান অনিয়মের কারণে নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মনোবল হারিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরা কষ্ট হলেও ফিরছেন ব্যয়বহুল প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে। রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।