মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পরপরই ওয়াশিংটনকে আলোচনার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছিল বেইজিং। শনিবার শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকেই চীনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, বাণিজ্যিক লড়াইয়ে কেউই বিজয়ী হয় না। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পরই পাল্টা আঘাত করে বেইজিং। চীনে রপ্তানি হওয়া আমেরিকান কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে বেইজিং। এ ছাড়া ক্রুড তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও মালবাহী বাহনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আমেরিকার টেক জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে চীনা বাণিজ্যিক নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত করার ঘোষণা করা হয়েছে। চীনা সরকার বাণিজ্যিক বিরোধের বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রত্যাশায় ছিল। এরই মধ্যে সোমবার ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক ৩০ দিনের জন্য স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন।
এর আগেও ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে এই শুল্কের লড়াই হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের প্রথম আমলের পর সময় এখন অনেক বদলে গেছে। চীনের অর্থনীতি আর আগের মতো আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল নয়। আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক চুক্তি রয়েছে। ১২০টির বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে দেশটির।
চীনের ওপর আরোপ করা শুল্ক থেকে ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষিত সুবিধা অর্জন নাও হতে পারে জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে বিরাট সুযোগ দেখছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নিজের বিচরণের ক্ষেত্রেই অনৈক্য আনছেন ট্রাম্প। ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম মাসেই ইউরোপের দেশগুলোসহ মিত্রদের প্রতি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে চলছেন ট্রাম্প।
এর বিপরীতে চীন নিজেকে ধীরস্থির ও আকর্ষণীয় বৈশ্বিক বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে চলছে।
সিম্পসন সেন্টারের চায়না প্রোগ্রামের ডাইরেক্টর ইউন সান বলেন, ‘ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট নীতি বিশ্বের সব দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ ও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকা-চীনের কৌশলগত প্রতিযোগিতার দৃষ্টিকোণ থেকে, আমেরিকান নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস চীনের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চীনের জন্যও অসুবিধা হলে বেইজিং এর থেকে সুবিধা আদায় করতে চেষ্টা করবে।’
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীনের নেতৃত্বে বিশ্বে আমেরিকার বিকল্প ওয়ার্ল্ড অর্ডার তৈরির আকাঙ্ক্ষা কখনোই গোপন করেননি।
ডেস্ক/এমএস