আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিগত দুই মৌসুমের ন্যায় চলতি ২০২৫ মৌসুমেও থাকছে না গাছ থেকে পরিপক্ব আম পাড়া বা সংগ্রহের কোন নির্দিষ্ট সময় সীমা। যখন যে গাছে বা বাগানে যে আম প্রাকৃতিকভাবে পরিপক্ব হবে তখন সেই আম গাছ থেকে নামানো যাবে। তবে তা যেন যথাযথ হয় তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৮মে) বিকাল সাড়ে ৪টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত চলতি বছরের ম্যাংগো ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, বিপণন, পরিবহন এবং বাজারজাতকরণ সংক্রান্ত মতবিনিময়সভা শেষে সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ এ সিদ্ধান্ত জানান।
জেলা প্রশাসক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও আম উৎপাদনকারী আশপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন বাজারে পাকা ও কাঁচা আম কেনা-বেচাতে কত কেজিতে মন হবে তা বিভিন্ন রকম হয়। এটির জন্য একটি নির্ধারিত ওজন ঠিক করে দেওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। তবে এ ব্যাপারের প্রশাসন হস্তক্ষেপ করবে না। এ ব্যাপারে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
যেহেতু বিষয়টি কাঁচামাল সংশ্লিষ্ট এবং নাজুক তাই আম কেনা-বেচাতে কখন কোন বাজারে কত কেজিতে মন হবে তা ওই বাজার সংশ্লিষ্টরাই ন্যায্যতার ভিত্তিতে আলোচনা করে ঠিক করবেন। তবে জেলার আম উৎপাদনকারী বৃহত্তম উপজেলা শিবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌছিক আজিজের প্রাথমিক প্রস্তাবনা অনুযায়ী শুধু শিবগঞ্জের আড়তসমূহে পাকা আম সাড়ে ৪২ কেজিতে এবং কাঁচা আম ৪৫ কেজিতে ক্রয় সংক্রান্ত প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত হওয়া যায়। তবে এটি চাপিয়ে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, এছাড়া জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জেলার প্রবেশ মুখে একটি ‘আম’ ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
যা জেলা পরিষদ বাস্তবায়ন করবে। এজন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ভরা আম মৌসুমে জেলা থেকে আম পরিবহনের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করবে রেলওয়ে। পোস্ট অফিসও আম পরিবহনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী পরিবহন সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
সভায় সংশ্লিষ্টরা বলেন, গাছে পরিপক্ব না হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাড়া হয় না। আম সংরক্ষণ ও পাকাতে ক্ষতিকর ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংস্কৃতির অংশ।
আম রপ্তানি বাড়ানো, উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে (গ্যাপ) নিরাপদ আম উৎপাদন বাড়ানো, রপ্তানি বাড়াতে ঢাকার শ্যামপুরের বাইরে রাজশাহী অঞ্চলে একটি প্যাকেজিং হাউস চালুসহ বিভিন্ন দাবি, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।