সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কয়রায় পথচারি ও ভ্যান চালকদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন বিতরন চরফ্যাশনে মেঘনা নদীর তীরে মাটি কাটায় অর্থদণ্ড সোনাগাজীতে সিএনজি অটোরিকশা উল্টে চালক নিহত বাগআঁচড়া নাভারণ ও বেনাপোল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নে মহান মে দিবস পালিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ প্রতিকার ও নিষ্পত্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন শ্রীমঙ্গলে এক কিশোরকে কুপিয়ে জখম শিবগঞ্জের শাহাবাজ পুর ইউনিয়নে কমিউনিটি পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য আটপাড়ায় প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ আটপাড়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী আলী খানের উদ্যোগে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন
মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, দানের জমি বিক্রি ও জালসনদ বাণিজ্য

মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, দানের জমি বিক্রি ও জালসনদ বাণিজ্য

গোলাম কবির, ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি :

দানের জমি বিক্রি। জালসনদ বাণিজ্য। শিক্ষক র্নিযাতনসহ নানা অনিয়মের সাথে জড়িত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার নামোটিকরি আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস সালাম। সম্প্রতি তাঁর প্রতিকার চেয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রসাশক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, দুদকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসির পক্ষে মোঃ আব্দুস সালাম নামের একজন সচেতন ব্যক্তি। তিনি তাঁর অভিযোগে বলেন, মাদ্রাসা সংলগ্ন একজন দরিদ্র নারী গঙ্গারামপুর গ্রামের ভোগরুদ্দিনের বিধবা স্ত্রী মেরাতুন ২০১৪ সালের ২০ মে মাদ্রাসাকে গঙ্গারামপুর মৌজার আরএস খাতিয়ান নং ৩২৫ দাগ নং ১২৩ রকম আম বাগান পরিমাণ .০০৪০ জমি নামোটিকরি মাদ্রাসাকে দান করেন। মাদ্রাসার পক্ষে গ্রহীতা হিসেবে অধ্যক্ষ মোহাঃ আব্দুস সামাদ রেজিষ্ট্রি গ্রহণ করেন। পরে ২০২০ সালে সেই দানের জমি মেরাতনের ছেলে মোকার কাছে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন অধ্যক্ষ মোহাঃ আব্দুস সালাম বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন মেরাতনের ছেলে গ্রহিতা মোকা।

এদিকে কালিচক মৌজার ১৭৮ ও ১৮০ নং দাগে ১৪শতাংশ এবং ৩১২ দাগে ২২ শতাংশ জমি মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে স্থানীয় গোরস্থানের কাছে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এছাড়াও রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ। জমি বিক্রির টাকা মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজে ব্যয় না করে অধ্যক্ষ আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগকারি অভিযোগে উল্লেখ করেন। এদিকে জাল সনদ বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। উপজেলার কান্তিনগর গ্রামের মোঃ আবোল হোসেনের ছেলে মোঃ টমাস আলী মাদ্রাসা চত্বরে পা না দিয়েই পেয়েছেন দু দুটো ৮ম শ্রেনী পাশ সনদপত্র। একটি ২০০৮ সালের সনদে মাদরাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেনি হতে ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত অধ্যয়নরত থেকে ৩.০০ জিপিএ(বি) নিয়ে পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছেন। অপর সনদে উল্লেখ করা হয় তিনি মাদ্রাসায় এবতেদায়ী ১ম শ্রেনী হতে ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত পড়ে বার্ষিক পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছেন ২০০৭ সালে। দু’বছরে দুটি জাল সনদ নিয়ে মোবারকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করছেন এবং বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন মোঃ টমাস আলী এমন অভিযোগও রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ৪০দিনের কর্মসূচি কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর শ্রমিক তালিকার ক্রমিক নং-১৬৮।

সরজমিনে গিয়ে জাল সনদ গ্রহণকারী মোঃ টমাস আলীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, নামোটিকরি মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেনি থেকে ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত পড়া-লেখা করেছি। লক্ষিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেনি পর্যন্ত পড়া-লেখা করার কথা বলেন। তবে মাদ্রাসা থেকে ২০০৭ ও ২০০৮ সালের দুটি ৮ম শ্রেনি পাশের সনদ রয়েছে তাঁর নামে। তিনি ২০০৭ সালের সনদ দিয়ে মোবারকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে চাকুরি করছেন যা মাদ্রাসা থেকে এবতেদায়ী ১ম শ্রেনি থেকে ৮ম শ্রেনি পড়েছেন মোঃ টমাস আলী। কিন্তু তিনি বলেছেন, ১ম শ্রেনি থেকে ৫ম শ্রেনি পর্যন্ত লক্ষিপুর সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন মাদ্রাসা থেকে করেননি।

এসব ব্যাপারে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মোহাঃ আব্দুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোঃ টমাস আলীকে ৮ম শ্রেনি পাশের সনদ দেয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ২০০৭ সালের সনদ আমি দিয়েছি। এ সনদে এবতেদায়ী ১ম শ্রেনি থেকে ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়া-লেখা করেছেন। কিন্তু লক্ষিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেনি পাশ করেছেন মোঃ টমাস আলী জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে দুটি সনদের মধ্যে একটি জাল সনদ দাবী করেন অধ্যক্ষ।

এদিকে মাদ্রাসার নামে স্থানীয় বিধবা মহিলা মেরাতনের দানের জমি বিক্রি করেছেন এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাদ্রাসার উন্নয়নে জমি বিক্রির করা হয়েছে। মাদ্রাসার জমি বিক্রি করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয় জানতে চাইলে, এব্যাপারে তিনি বলেন ঐ সময় এ নিয়ম ছিল না।
ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধির সাথে কথা বললে অভিযোগের বিষয়ে তাঁরা মুখ খোলেননি। তবে একজন প্রবীন শিক্ষক মোঃ আসগর আলী বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না। কিছু বলতে গেলে শিক্ষকদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এছাড়া তাঁর মন মত না হলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাতিল করে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, এর পূর্বে অনেক কর্মকর্তা এসেছিলেন কোন প্রতিকার হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এসব ব্যাপারে মাদ্রাসা সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জমি বিক্রির ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। অল্প কিছু দিন হলো সভাপতি হওয়া।

শিবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে ২৯মে নামোটিকরি মাদ্রাসার ব্যাপারে একটি অভিযোগ করা হয়েছে বিষয়টি কি অবস্থায় আছে জানতে চাইলে বাজারে আছি অফিসে আসেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com