মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মাপাড়ে সৃষ্টি হওয়া খাস জলাশয়ে মাছ চাষ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের খেজুরের গাছ কাটার ধারালো বাটাল দিয়ে খুঁচিয়ে লিখন হোসেন (২৬) যুবককে খুন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লিখন হোসেন বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের নিচে পদ্মাপাড়ে সৃষ্টি হওয়া খাস জলাশয়ে মাছ ছাড়েন লিখন ও তার পরিবার। তবে একই গ্রামের বাচ্চু হোসেনের ছেলে নাসিফ হোসেন (৩৫) সেই জলাশয়কে নিজের বলে দাবি করেন এবং সেখানে মাছ চাষে বাধা দেন। এ নিয়ে সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে লিখন তার বাড়ির পাশেই একা দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় আগের দিনের কথা কাটাকাটির জের ধরে খেজুরের গাছ কাটার ধারালো বাটাল দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত লিখনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত লিখনের মা হাসিনা বেগম জানান, তার ছেলে রাজধানীর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। রোববার (১৩ নভেম্বর) ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিল। তার প্রতিবেশী বাচ্চুর ছেলে নাসিফ হোসেনের সাথে সোমবার দুপুরে পদ্মা নদীর ধারে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে বাড়ির পাশে একা পেয়ে আজ তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি হত্যাকারীর ফাঁসি চান।
বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আবদুর কাদের মোল্লা বলেন, লিখন ও নাসিফ পরস্পর প্রতিবেশী। লিখন হোসেনের কোনো জমি নেই। পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় আশপাশে কিছু জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে কিছুদিন আগে লিখন মাছ ছেড়েছেন। তবে পদ্মার ধারের জমিতে সৃষ্টি হওয়া খাস জলাশয় নাসিফ হোসেন তার নিজের বলে দাবি করেন। তিনি ওই জলাশয়ে মাছচাষ করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে দ্ব›েদ্বর জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
বাঘা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সবুজ রানা বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহালে নিহতের ডান পায়ের হাটুর ওপরে জখম পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আঘাতজনিত কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নাসিফ পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হবে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
মাছ ছাড়ার জায়গাটি উন্মুক্ত জলাশয় কিনা জানতে চাইলে বাঘা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শারমিন আখতার বলেন, সরেজমিন তদন্ত না করে মন্তব্য করা যাচ্ছেনা। ঘটনার পর থেকে এলাকা ছাড়া বাচ্চু মন্ডল আর তার ছেলে নাফিজ হোসেন । মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।